শরীর ও মনের আনন্দের জন্য সাইক্লিং

 

শরীর ও মনের আনন্দের জন্য সাইক্লিং
 বাঙালির জীবনে সাইকেল শব্দটি বেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। একটা সময় এই জনপদে সাইকেলই ছিলো জনমানুষের প্রধান বাহন। সময়ের পরিক্রমায় বাহন হিসাবে সাইকেলের গুরুত্ব কমলেও, সাইকেল চালানোর উপকারী দিককে অস্বীকার করতে পারছেন না কেউই।


সাইকেল নিয়ে সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি বলেছেন, সাইকেল চালানোর যে সহজাত আনন্দ সেটা আর অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। তিনি সত্যিই বলেছেন। কারণ স্বাস্থ্য গবেষক ও চিকিৎসকরা বলছেন, শরীর ও মন ঠিক রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় সাইক্লিং।


ছোটবেলায় সাইকেলের সাথে পরিচয় ঘটে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সময়ের সাথে সাইকেল এখন হয়ে উঠেছে শরীর ও পরিবেশবান্ধব একটি বাহন। ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে আপনার সময়ও বাঁচিয়ে দেবে দুই চাকার সাইকেল। সেই সঙ্গে আপনাকে দেবে সুস্থ শরীরের নিশ্চয়তা।


ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের হিসাব বলছে, বিশ্বজুড়ে এখন দুই বিলিয়নের বেশি সাইকেল ব্যবহার হচ্ছে। ২০৫০ সাল পর্যন্ত যেই সংখ্যাটা ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটিতে গিয়ে ঠেকতে পারে।অর্থাৎ জীবিকার তাগিদে, বাহন হিসেবে বা খেলাধুলার মাধ্যম হিসেবে সাইকেল জনপ্রিয় হচ্ছে।


এতে আছে স্বাস্থ্যগত সুবিধা। সাইক্লিং দেহ ও মনের নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন কমিয়ে দেয়, তেমনি শরীরের পেশিকে শক্তিশালী করার সাথে সাথে সহনশীলতাও বাড়িয়ে দেয়। সাইকেল চালানোর জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই। যে কোন বয়সই সাইকেল চালানোর জন্য খুবই উপযোগী।


তবে, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের এক হিসাব বলছে, যেসব পুরুষের বয়স ৫৫ থেকে ৬৯ বছর, তারা বাইসাইকেল দুর্ঘটনায় মারাও যেতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতার দিকে জোর দেয়া হয়েছে। ফলে চার থেকে পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত সাইকেল চালানো যায়।


বলা হয়ে থাকে, সাইক্লিং যদি একটা ওষুধ হতো, তাহলে ডাক্তাররা এটা সবাইকেই প্রেসক্রিপশনে লিখে দিতেন। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা ও গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সাইকেল চালিয়ে কাজে যান তাদের যে কোনো রকম মৃত্যু ঝুঁকি ৪১ শতাংশ কমে যায়।


cycle2


সাইক্লিং শারীরিক নানা রোগ দূরে রাখার পাশাপাশি মানসিক রোগও দূর করে। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ওয়েবসাইট বেটার হেলথ চ্যানেলে বলা হচ্ছে, সাইক্লিং স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ক্যান্সার, মানসিক অবসাদ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং আর্থাইটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করে।


গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. জেসন গিল বলেন, সাইকেল চালিয়ে কাজে যাওয়ার উপকার অস্বীকার করা যাবে না। সাইকেল চালালে অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। মনের সাথে যুদ্ধ করতে হয় না। আর শারীরিক ব্যায়ামগুলোর মধ্যে সাইক্লিং হলো সবচেয়ে সস্তা এবং আনন্দময়।


অন্যান্য স্পোর্টসের মতো এতে অনেক স্কিলের দরকার হয় না, বেশিভাগ মানুষই সাইকেল চালাতে জানে এবং সবচেয়ে মজার দিক হলো আপনি একবার সাইকেল চালানো শিখলে সেটা আর জীবনে ভুলবেন না। তাই কথায় বলে সাইকেলের সঙ্গে জীবনের ভারসাম্যের সম্পর্ক আছে।


Post a Comment

أحدث أقدم